১৯৬৩ সালে যখন চট্টগ্রাম ওয়াসা চালু হয়, তখন এই শহরে জনসংখ্যা ছিল ৭ থেকে ৮ লাখ। শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি দিনে মাত্র এক কোটি লিটার পানি উৎপাদন করত। ওই পানি নগরের হাতে গোনা কিছু মানুষের কাছে পৌঁছাত। এরপর ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা বেড়েছে। বেড়েছে শহরের জনসংখ্যা। পানি শোধন ও সরবরাহের প্রকল্পেও এগিয়েছে সংস্থাটি। কিন্তু এখনো গ্রাহকসেবায় পুরোপুরি সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেনি।
মোটা দাগে চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহকদের তিন ধরনের সেবা দেওয়ার কথা। এর মধ্যে রয়েছে সুপেয় পানি সরবরাহ, পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। প্রতিষ্ঠার ৫৯ বছরেও সংস্থাটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি। ফলে ব্যবহৃত পয়োবর্জ্য খাল-নদী-নালায় মিশে দূষণ ছড়াচ্ছে। পানির মান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। নানা সময়ে গ্রাহকেরা পানিতে ময়লা পাওয়ার অভিযোগ করেন। সংযোগ থাকা সত্ত্বেও অনেক এলাকায় নিয়মিত পানি পৌঁছায় না। আবার পানির বিল দিতে গিয়েও গ্রাহকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। মূলত গড় বিল পদ্ধতির কারণেই ওই ভোগান্তি।
বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক গ্রাহক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি। ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের পানির দৈনিক উৎপাদন এখন ৪৫ থেকে ৫০ কোটি লিটার। চাহিদাও ৪৫ কোটি লিটার। কাগজে-কলমে চাহিদা ও উৎপাদন সমান হলেও ‘সিস্টেম লসের’ কারণে ওয়াসা গ্রাহককে সরবরাহ দিতে পারে সাড়ে ৩৩ কোটি লিটার। এই সিস্টেম লসের নামে প্রচুর পরিমাণ পানি চুরি হয়, যা স্বীকার করেছেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ। এতে ওয়াসার বছরে ক্ষতি ১৪৭ কোটি টাকা।