গোপনীয়তা রক্ষা করতে না পারায় সারা দেশে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের তথ্য সংগ্রহ ও তালিকা তৈরির কাজটি আপাতত বন্ধ রেখেছে পুলিশ। যাতে গোপনীয়তা বজায় থাকে, সেই প্রক্রিয়া ঠিক করে কাজটি নতুনভাবে শুরু করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।
বিএনপি, জামায়াতসহ সরকারবিরোধী দল ও সংগঠনের নেতাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য গত মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সারা দেশে জেলা পর্যায়ে পুলিশকে নির্দেশনা পাঠায় পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। এই খবর সম্প্রতি জানাজানি হলে অস্বস্তিতে পড়ে পুলিশ। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দলকে দমন–পীড়নের লক্ষ্যে পুলিশ সারা দেশে তালিকা করছে।
যদিও পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এবং সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মনজুর রহমান গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে এসবি এ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। সম্প্রতি আলোচনায় আসা চিঠিতে যা–ই উল্লেখ করা হোক না কেন, এসবি সব রাজনৈতিক দলের তথ্য সংগ্রহ করে এবং নিয়মিত সেই তথ্য হালনাগাদও করে।
পুলিশ সূত্র জানায়, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য গত ২২ সেপ্টেম্বর এসবির প্রধান কার্যালয়ের রাজনৈতিক শাখা থেকে সব জেলার পুলিশ সুপার এবং মহানগরের পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।
সেই নির্দেশনার আলোকে রাঙামাটির পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে থানার ওসিদের (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) কাছে পাঠানো এ–সংক্রান্ত বার্তা ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর ৭ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের এসবির (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) প্রধান কার্যালয়ের বরাত দিয়ে রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি–ডিএসবি) গত ২৫ সেপ্টেম্বর একটি বেতার বার্তা (নম্বর ৩৯০৯, রাজনৈতিক) পাঠিয়েছে। ওই বার্তায় বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কমপক্ষে আটজন শীর্ষ ব্যক্তি (জেলা পর্যায়ের নেতা), প্রতি উপজেলার পাঁচজন শীর্ষ নেতা এবং পৌর সভা ও ইউনিয়নের পাঁচজন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যাঁরা সরকারবিরোধী আন্দোলনে ‘জনবল সংগঠক’বা ‘অর্থায়ন করেন’ কিংবা অন্য কোনোভাবে সহায়তা করেন। এঁদের বিস্তারিত তথ্য, যেমন ঠিকানা, মুঠোফোন নম্বর, এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) নম্বর ইত্যাদি সংগ্রহ করে ই–মেইলে এবং পরে হার্ড কপি (কাগজে) পাঠাতে জেলার সব থানার ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।