য়স হয়েছিল তাঁর ৩৯ বছর। মারা গেলেন মশার কামড়ে, ডেঙ্গুতে; ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২-এ। মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুলের সদা হাসিময় শিক্ষক ফারজানা ফাতেমা রেখে গেছেন ১৩ বছরের ছেলে আর ৬ বছরের মেয়েকে। ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত সারা দেশে মারা গেছেন ৮৩ জন।
মশার কথা এলেই প্রথমে মানুষের কথা আসে, অন্য কোনো কারণে নয়—মশা লিখতে ম লাগে, মানুষ লিখতেও। ম দিয়ে অনেক শব্দের মধ্যে আরও একটি শব্দ দ্রুত মনে পড়ে যায়—মেয়র। আরও একটু আদব দিয়ে বললে মহামান্য মেয়র, এই মহামান্যতেও ম লাগে।
মেয়র মশা মারিবার পর উহা উড়িয়া গিয়া প্রমাণ করিল, মশা মরে নাই। তিন যুগে মশা মারার জন্য এই দেশে কত টাকা খরচ হয়েছে, এটা অনেকেই জানি; কম আর বেশি। প্রতিবার মশার উপদ্রব বাড়লে মেয়র মহোদয়েরা কী বলেন, এটাও জানি। আর মশা মারার ওষুধে কতটুকু ওষুধ থাকে, জানি এটাও।
কিন্তু এটা কি জানি—মশার কামড় থেকে বাঁচার অন্য রকম একটা উপায় আছে? উপায়টা হলো দুর্গন্ধময় কোনো প্রাণীকে জাপটে ধরে ঘুমিয়ে পড়া। আর এটার সত্যতা বলে গেছেন জে ডব্লিউ গিলেট নামে এক ব্রিটিশ বায়োলজিস্ট, তাঁর দ্য মসকুইটো বইয়ে। অনেক আগে থেকেই এই পদ্ধতি পালন করে আসছে ইতালীয়রা। শূকরছানা নিয়ে ঘুমিয়ে দেখা গেছে, সারা রাত মশা যা করেছে, তা এই দুর্গন্ধময় প্রাণীটিকেই করেছে, মানুষের গায়ে কোনো ছোঁয়াও দেয়নি!
চিন্তায় ফেলে দিলাম। এ দেশে এ রকম দুর্গন্ধময় প্রাণী কই পাই? আছে ভাই, আছে। যারা কথায় কথায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বরখেলাপের দুর্গন্ধ ছড়ায়, ক্ষমতায় গিয়ে যত্রতত্র ক্ষমতার দুর্গন্ধ ছড়ায়, দায়িত্ব পালনে দায়িত্বহীনতার দুর্গন্ধ ছড়ায়, আমাদের আশপাশে তেলাপোকার মতো বিচরণ করা এ রকম কাউকে বেছে নিতে পারেন নির্দ্বিধায়।